মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১১

কুক্কু-রুক্কু ( একটি রাজাকার নিধন সাই-ফাই)


১)

৪৩০০ খ্রীষ্টাব্দের পৃথিবী। নাসা’র বিজ্ঞানীরা মুখ কালো করে বসে আছেন। তাদের সব কম্পিউটারগুলো এলিয়েন এলার্ট দিচ্ছে, কিন্তু কোনো স্পেসশীপ কিংবা কোনো স্পেশাল ওয়েভলেংথ ধরতে পারছেনা। সন্ধ্যা থেকে পিপ পিপ করে যাচ্ছে,  কিন্তু কোনো সিগন্যাল দিতে পারছেনা। আর থাকতে না পেরে চুন খা নামের এক চাইনীজ বিজ্ঞানী “হাইয়া” বলে এক আছাড় দিয়ে তার কম্পিউটারটা গুড়ো গুড়ো করে ফেললেন। ভাঙ্গা কম্পিউটার থেকে তখনো পিপ পিপ শব্দ হয়েই চলেছে।

২)
আজ ২৩শে মার্চ, জাতীয় পাকিস্তান দিবস। গেলমান আজম, সেলোয়ার হোসেন পাইদী, বাঁকা চৌধুরী, মতিউর রহমান হারামী আজ তাদের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছেন। টপ র‍্যাটেড যুদ্ধাপরাধীদের এই হঠাৎ সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশ তাজ্জব বনে গেছে সারাদেশের আনাচে কানাচে থেকে সাংবাদিকরা হুড়মুড় করে ছুটে এলেন।

৩)
নাসা’র ঘাঘু বিজ্ঞানীরা অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত বুঝতে পারলো যে, বহিঃপৃথিবীর কেউ অনেক আগেই এসেছিলো এবং তারা চলেও গেছে হাজার বছর পুর্বে। কিন্তু, আলোর বেগের চেয়েও বেশী বেগে চলায় তারা এতো হাজার বছর পরে তা ধরতে পেরেছে। এক মাস ইনভেস্টিগেশনের পর রিপোর্ট থেকে জানা গেলো, স্পেস শীপটি বাংলাদেশ নামক প্রাচীন পৃথিবীর এক দেশে নেমেছিলো। তারা তৎক্ষণাৎ সেখানে গবেষনা করার জন্য রওনা দিয়ে দিলো।

৪)
সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়ে গেলো। একযোগে তা বিটিভি, চ্যানেল নাই, ইররে (ইভা রহমান রকস) টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হতে লাগলো।

প্রশ্ন- “আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের কারণ কি?”
সেলোয়ার হোসেন পাইদী – “ আমি একজন উলামায়ে ছু। জীবনে অনেক গুনাহ করিয়াছি। নিজের গুনাহ নিজেই আর সহ্য করিতে পারছিনা। তাই, প্রিয় দেশবাসীর প্রতি আমার কিছু বানী বলার ছিলো”
গেলমান আজম – “ জ্বে, কথা সইত্য! ৭১ সালে আমরা বহুত আকাম করছি। অহন, আমাগো আয়ু শেষ। মাফ করার মালিক আল্লাহ পাক, তয় জজ সাহেব ক্ষমা করলেও দোষ নাই! আমরা স্বীকার কইরা লইছি সব কিছু”

প্রশ্ন- “আপনারা কি করেছিলেন, ঠিক করে বলুন তো?”
বাঁকা চৌধুরী – “ এই ছেমরী, বাংলা কথা বুঝোস না? আকাম করসি আকাম! মাইনষের ঘড় পুড়াইসি, মাইয়াগো নষ্ট করসি, মুক্তিগো ধইরা ধইরা জবাই করসি। আর কিছু শুনবার চাস?”
মতিউর রহমান হারামী – “ আহ হাহ ! বাঁকা তুম কিয়া কাররাহেহো? গোস্তাখী মাফ করেঙ্গে। হাম ভুল কিয়া। মাগার, আমরা মাফি চাইতেছি। পাকি আর্মি, মতলব হামারা মালিক রা বাঙ্গালী দের চিনতো নেহি। আমরাই উন লোগোকো সাব চিনায়া হে। সবকা খাশী, গরু জবাই করে করে খাওয়াত হে। খুবসুরত, কম বয়সী লেরকী লেকার হাম লোক মৌজ কিয়া থা। লেকিন, এখন আমরা বুড়া হয়া গেসি। আমাদের হাড্ডি পাইকা গেসে। এখন হাজতে নিয়ে ডিম থেরাপী দেবার কোনো সার্থকতা আছে? বলেন আপনেরা?”
ডিম থেরাপীর কথা মনে পরতেই পাইদী পেছনে হাত বুলাতে লাগলো।
প্রশ্ন – তো আপনারা আপনাদের দোষ স্বীকার করে নিচ্ছেন?
গেলমান আজম – “দোষের তো কিছু নাই এইখানে। আমরা তখন যা করসি, উনারা যদি এখন তা করে, আমরা মানা না করলেই তো হইলো? শোধবোধ!
পাইদী – “লা জোয়াব ইয়া গেলমান”

মুহুর্তের মধ্যেই সমস্ত কার্যালয় পুলিশ ও র‍্যাব ঘিরে ফেলে। ভেতরে ঢুকে দেখে শুধু সাংবাদিকরা সেখানে, চার আসামীর একজনও নেই।



৫)

ইন্টারনেটে দু হাজার বছর আগের ভৌগলিক ম্যাপ ঘেটে নাসার ২২জন বিজ্ঞানী এই বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, এখন তারা মগবাজার নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা খোড়াখুড়ি শুরু করে দিলেন। বিভিন্ন আইসোটোপ ব্যাবহার করে সেখানে কার্বণের অস্তিত্ব খুজে বের করতে লাগলেন। আধুনিক পৃথিবীর সব কিছুই সিনথেটিকের। এমন কি মানুষের ত্বক ও। ক্ষতিকর মহাজাগতিক রশ্মী থেকে বাঁচার জন্য জেনেটিক কোডিং করে এ ব্যাবস্থা করা হয়েছে
হঠাৎ সি.এফ.এম (কার্বন ফাইন্ডার মেশিন) যন্ত্রটা প্রচন্ড জোড়ে বীপ বীপ করতে লাগলো। সাথে সাথে তারা খোড়াখুড়ি করা শুরু করে দিলেন। একটা প্রাচীনকালের সংবাদ পত্র খুজে পেলেন তারা। নাম “পচন আলু”, তারিখ দেয়া আছে ২৬শে মার্চ ২০১২ সালের। তারা ল্যাঙ্গুয়েজ ডিটেক্টর দিয়ে যে খবর উদ্ধার করলেন, তার অনুবাদ অনেকটা নিম্নরুপ –

উতপল কুম্ভ, ২৬শে মার্চ, ২০১২ :
                                   গত দু সপ্তাহ আগে দেয়া ঝড় তোলা সংবাদ সম্মেলনের উপর ভিত্তি করে সেলোয়ার হোসেন পাইদী, বাঁকা চৌধুরী, গেলমান আজম ও মতিউর রহমান হারামীর ফাঁসী কার্যকর হয়েছে গতকাল রাত ১২টা বেজে ১ মিনিটে গতকাল এ ঘটনার পর সারাদেশে আনন্দ মিছিলের ঢল নামে মিষ্টির দোকানে মিষ্টির তীব্র সংকট দেখা দেয় এই সময়ে তৎক্ষণাৎ বিরোধী দলের সদস্যদের কাছে তাদের অনুভুতি জানতে চাইলে তারা কিছু জানাতে প্রস্তুত নয় বলে জানান
ওই সংবাদ সম্মেলনের রেশ ধরে পুলিশ ও র‍্যাবের যৌথ আক্রমনে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চার শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীকে খুজে বের করা হয় বিতর্কিত ব্যাপারটি হলো, সংবাদ সম্মেলনের পর হঠাৎ বাতাসে মিলিয়ে গিয়ে কিভাবে ঢাকার বাইরে তারা আশ্রয় নিলো, তা এখনো খুজে বের করতে পারেনি পুলিশ। তবে, সেখানে উপস্থিত সকল সাংবাদিকগন আদালতে ওই সম্মেলনের পক্ষে সাক্ষ্মী দেন। আদালতে চার যুদ্ধাপরাধীর দেয়ালে মাথা ঠুকে কান্না করার দৃশ্যটি কেউ একজন ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়ায় তা এখন জন মোবাইলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তবে আদালত তাদের কোনো কুমিরের কান্নাকে প্রশ্রয় না দিয়ে ৩১শে মার্চের মধ্যে ফাঁসী কার্যকরের আদেশ দেন।  আদেশ হবার পরও তারা চিৎকার করতে থাকে যে, ঐ চারজন তারা ছিলেন না। চিৎকার করে আদালতের পরিবেশ নষ্ট করার অপরাধে তাদের কে আরো এক সপ্তাহ ডিম থেরাপী দেবার আদেশ দেয় আদালত।
সারাদেশ আজ আনন্দে উদ্বেলিত, তবে এখনো কেউ জানেনা কে ছিলো ওই চার জন? কেনোইবা তারা তাদের নিজদের অপরাধ সর্বসম্মুখে মেনে নিয়েছিলো? এ প্রশ্নের উত্তর খুজছেনা এখন কেউই। তবে আদালতের রায়ের প্রতি আজ সারা বাংলাদেশের সমর্থন ছিলো অবিস্মরনীয়।

৬)

৯৩২৪ খ্রীষ্টাব্দ। এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সীর ম্যান্ডি গ্রহের দুই বন্ধু কথা বলছে। তাদের নাম কুক্কু আর রুক্কু
-       রুক্কু
-       কি?
-       যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাবস্থা তো করেই দিয়ে আসলাম
-       হুম। তো?
-       ওদের তো আরো একটা ঝামেলা রয়ে গেছে।
-       আর কতো? মানুষের সব ঝামেলা যদি আমরাই মিটাই, ওরা করবেটা কি?
-       বোকার মতো কথা বলিস না। যুগ যুগ ধরে ওদের সমস্যা তো আমরাই মিটাচ্ছি। কিন্তু, বাংলাদেশের ঝামেলা মেটাতে মেটাতে আমার বিরক্তি ধরে গেছে।
-       আমারো। নতুন কি হয়েছে?
-       ওদের চার নেতার হত্যার বিচারটা বাকি।
-       চল, করে দিয়ে আসি। কি আর করার! ওদের এক বুড়া লোক ছিলো, কবিতা লিখতো। বেশ বুদ্ধিসম্পন্ন ছিলো, আমি ওই লোকের জিনেটিক ম্যাপিং দেখেছি। সেই লোক কি বলেছিলো, জানিস?
-       না। কি রে?
-       “সাত কোটি বাঙ্গালীরে, হে বঙ্গ জননী, রেখেছো বাঙ্গালী করে। মানুষ করোনি”

হাসতে হাসতে তারা স্পেসশীপে স্টার্ট দিলো। ভো ভো শব্দ করে স্পেসশীপ লাল সবুজের দেশে যাত্রা করলো।


সোমবার, ১৬ মে, ২০১১

মিজানুর রহমান তারপর চাঁপা রানী এবার ঈশিতা- ইভটিজি এর রক্তাক্ত সাক্ষী (ছোটো গল্প)

১)


-      এই বয়সে এত্তো বড় ?
-      হ! আমি তো অবাক!
-      জিগামু নাকি? কে হাতাইসে যে এত্তো বড় ! হা হা হা
-      ডাক দে !

মুন্না আর রঞ্জু বেগম রোকেয়া গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে। সুন্দর মেয়েদের সাথে একটু মজা নিচ্ছে। প্রতিদিন ভাত খাওয়ার মতোই রুটিন মাফিক কাজ। মুন্না মেয়েটাকে ডাক দিলো।

-      এই যে আপু, একটু শুনবেন?
মেয়েটা চুপ করে মাথা নীচু করে সামনে হাটতে লাগলো।
-      এই যে, একটু শুনেন। লজ্জা পাওয়ার কিছু নাইতো! আমরা তো হাতানো জিনিসে হাত দেইনা, শুধু কিভাবে এত্তো বড় হলো, একটু যদি বলে যেতেন!
চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে রিপা’র। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে। এত্তোগুলো গার্জিয়ানের সামনে এইসব কথা। ছিঃ ! রিপা তারাহুরো করে একটা রিক্সা নিয়ে কাদতে কাদতে চলে গেলো।

-      হ্যাহ ! কইতে পারবোনা কিন্তু করতে পারবো ! নষ্টা জানি কোথাকার!
-      আরে আর কইসনা! পাশের বাসারটারে কাইল্কা কইলাম তোমার ঠোট তো চুমাইতে চুমাইতে কালো হয়ে গেসে, দাও আমি লাল বানায় দেই, সে কি কান্না! রাতে মা-বাপ আইসা হাজির! দিছি গাইল্লায়া!
-      তোর বাপে না কমিশনার?
-      তাইলে? বুঝে ওরা কমিশনার কি ? যখন খাইবো তখন বুঝবো!
মুন্না আর রঞ্জু আরো কিছু নীচু মানষিকতার কথা নিয়ে হাসাহাসি করে, রুটিন মাফিক আরো আধা ঘন্টা মেয়েদের ডিস্টার্ব করে বাসায় গেলো।

-      আম্মা, কি করো ?
-      এতক্ষন কই ছিলি?
-      নোট ফটোকপি করতে গেসিলাম আম্মা! সামনে প্রি-টেস্ট না!
-      খবর দেখসস? চাপাঁ রানী মহিলাটারে কেমনে মাইরা ফালাইসে! কি অবস্থা! এইসব পোলাপাইন কোন মা যে পেটে নিসে! কি হারাম খাইয়া জনম দিসিলো কে জানে!
-      আরে এইসব হইলো ফকিন্নীর পুলাপান! আর মাইয়াগুলাও ভালা না আম্মা। কাপড়-চোপর ঠিক রাখবোনা, রাস্তায় পোলাগো দেখলেই রংঢং করবো। এগুলাও খারাপ। আম্মা, ২০টা টাকা দাওতো, কলম কিনা লাগবো!

মুন্না ৪টা বেনসন কিনলো। নতুন ৩টা নাম্বার পাইসে। আজকে কনফারেন্স কইরা মেয়েগুলারে জ্বালান লাগবে !

২)

রঞ্জু এখন মুগদায়। এক মেয়ের পিছা পিছে হাটতে হাটতে এসে পরেছে। রাস্তায় বেশ কয়বার কথা বলার চেষ্টা করে লাভ হয়নাই। ফোন নাম্বার চাইলেও দেয়নাই। মেয়েগুলা প্রচন্ড আনস্মার্ট! সমস্যা হইলো, এলাকার বাইরে যে আসলো, মুগদায় তার তেমন প্রতিপত্তি নাই। এখন যদি মেয়ে ভাই-টাই নিয়ে আসে, তাইলে তো ভবলীলা সাঙ্গ!

-      ওই ছেলেটা ভাইয়া, ওই যে লাল শার্ট , থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পরা ছেলেটা!
৬-৭টা ছেলে রঞ্জুর দিকে দৌড়ায় আসতেছে। রঞ্জুর আত্মা কেপে উঠলো, ইয়া আল্লাহ, ইয়া পরওয়ারদিগার! এই যাত্রা বাচাও!
-      ওই হারামীর পুত, ওই বান্দীর পুত, দাড়া কইতাসি। তুই পালাবি কই শালা, খাড়া !
রঞ্জু দৌড়াচ্ছে, প্রানপনে দৌড়াচ্ছে। তার প্রচন্ড পিশাবের বেগ এসেছে, কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে পিশাব করার উপায় নেই! সে দৌড়াচ্ছে, তার সামনে এখন শুধুই পথ, শেষ হচ্ছেনা।







৩)

মুন্নার ফোন বেজে উঠলো। বাসা থেকে ফোন এসেছে। এই মজার টাইমে ফোন ধরার কোনো মানে হয়না!
মুন্না আর তার পরানের বন্ধু মিশা মিলে এক মেয়েকে ভয় দেখিয়ে গলিতে নিয়ে এসেছে। তাদের সাথে গলিতে না ঢুকলে রাস্তায় তাকে দিগম্বর করে দিবে, এই ভয় দেখিয়ে তাকে গলিতে এনেছে।
-      এই, ওড়না আমার হাতে দে।
-      ভাই, আমারে ছাইড়া দেন। আপনের পায়ে পড়ি।
-      ওই মিশা, মাগীর দুই হাত চাইপ্পা ধর তো! ওয় বেশী ফট ফট করতাসে
-      খোদার কসম লাগে ভাই! আমারে ছাইড়া দেন। আমার আত্মহত্যা করন ছাড়া উপায় থাকবোনা ভাই। আমারে মাফ কইরা দেন ভাই!
-      চোপ! তোর লগে তখন একটু গল্প করতে চাইছিলাম তখন বহুত ভাব দেখাইসিলি। তুই ফাহাদের লগে কথা কইতে পারোস আর আমার লগে পারোস না ক্যান? ফাহাদে কেলাসে ফাস্ট হয় দেইখ্যা ? অহন দেখ , তোরে মজাটা দেখাই। মিশার বাচ্চা তোরে কি কইলাম!
-      ভাই, আমারে মাফ কইরা দেন। আমি  আর কারো লগে কথা কমুনা। আমারে ছাইড়া দেন!

আবারো মুন্নার ফোন আসলো। মিশার হাতে মেয়েটাকে ধরিয়ে একটু দূরে এসে মুন্না ফোন ধরলো।
-      হ্যালো
-      মুন্নারে, বাপ , তুই কই গেলি রে ............ তোর বোইন তো গলায় ফাসি দিসেরে বাপ......। ও বাপ রে ............ ও আল্লাহ .........
মুন্না আর কিছু শুনতে পেলোনা, হাত থেকে মোবাইল পরে গেলো। ছুটে গেলো বাসায়।


৪)

গনপিটুনিতে এক বখাটের মৃত্যু

গতকাল মুগদাপাড়ায় গনপিটুনিতে রঞ্জু(১৭) নামে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু ঘটে। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী, স্মৃতি(১৫) নামের এক মেয়ের পিছে পিছে সে এখানে আসে এবং মেয়েটাকে বারবার যৌন হয়রানী করে। এলাকাবাসী তা প্রত্যক্ষ্য করে তাকে বোঝানোর পরও সে স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে বাজে উক্তি করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে স্মৃতির বস্ত্র হরণে উদ্যত হলে এলাকাবাসীর বেদম পিটুনীতে তার উক্ত স্থলে মৃত্যু ঘটে।
দৈনিক হায় হায় দিন, স্টাফ রিপোর্টার।

( রঞ্জু মৃত্যুর আগে পিশাব করতে পারেনি। মৃত্যুর মধ্যে দিয়েই তার পিশাব বের হয়ে যায়)

৫)

মুন্নার বোন, ঈশিতা ফাসি দিয়েছে। রাস্তায় আসার সময় কিছু বখাটে ছেলে তার শরীরে আপত্তিকর জায়গায় ধরাধরি করে এবং রাস্তায় তাকে লাঞ্চিত করে। সে সহ্য করতে না পেরে বাসায় এসে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে ফাসিতে ঝুলাটাকেই জীবনের শান্তিময় অধ্যায় বলে মেনে নেয়।
মুন্না বাকরুদ্ধ হয়ে পরে। যে ওড়না সে আরেক মেয়ের গলা থেকে খুলে নিয়েছিলো, সেই ওড়না আজ তার বোনের গলায় ফাসি হলো।

মুন্না বর্তমানে অপ্রকৃতস্থ। তাকে বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় ওড়না হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে।


শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১০

মিজানুর রহমান তারপর চাঁপা রানী এবার ঈশিতা- ইভটিজিং এর রক্তাক্ত সাক্ষী (ছোটো গল্প) (১৮+ হয়াটাই স্বাভাবিক)

১)

- এই বয়সে এত্তো বড় ?
- হ! আমি তো অবাক!
- জিগামু নাকি? কে হাতাইসে যে এত্তো বড় ! হা হা হা
- ডাক দে !

মুন্না আর রঞ্জু বেগম রোকেয়া গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে। সুন্দর মেয়েদের সাথে একটু মজা নিচ্ছে। প্রতিদিন ভাত খাওয়ার মতোই রুটিন মাফিক কাজ। মুন্না মেয়েটাকে ডাক দিলো।

- এই যে আপু, একটু শুনবেন?
মেয়েটা চুপ করে মাথা নীচু করে সামনে হাটতে লাগলো।
- এই যে, একটু শুনেন। লজ্জা পাওয়ার কিছু নাইতো! আমরা তো হাতানো জিনিসে হাত দেইনা, শুধু কিভাবে এত্তো বড় হলো, একটু যদি বলে যেতেন!
চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে রিনা’র। লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে। এত্তোগুলো গার্জিয়ানের সামনে এইসব কথা। ছিঃ ! রিনা তারাহুরো করে একটা রিক্সা নিয়ে কাদতে কাদতে চলে গেলো।

- হ্যাহ ! কইতে পারবোনা কিন্তু করতে পারবো ! নষ্টা জানি কোথাকার!
- আরে আর কইসনা! পাশের বাসারটারে কাইল্কা কইলাম তোমার ঠোট তো চুমাইতে চুমাইতে কালো হয়ে গেসে, দাও আমি লাল বানায় দেই, সে কি কান্না! রাতে মা-বাপ আইসা হাজির! দিছি গাইল্লায়া!
- তোর বাপে না কমিশনার?
- তাইলে? বুঝে ওরা কমিশনার কি ? যখন খাইবো তখন বুঝবো!
মুন্না আর রঞ্জু আরো কিছু নীচু মানষিকতার কথা নিয়ে হাসাহাসি করে, রুটিন মাফিক আরো আধা ঘন্টা মেয়েদের ডিস্টার্ব করে বাসায় গেলো।

- আম্মা, কি করো ?
- এতক্ষন কই ছিলি?
- নোট ফটোকপি করতে গেসিলাম আম্মা! সামনে প্রি-টেস্ট না!
- খবর দেখসস? চাপাঁ রানী মহিলাটারে কেমনে মাইরা ফালাইসে! কি অবস্থা! এইসব পোলাপাইন কোন মা যে পেটে নিসে! কি হারাম খাইয়া জনম দিসিলো কে জানে!
- আরে এইসব হইলো ফকিন্নীর পুলাপান! আর মাইয়াগুলাও ভালা না আম্মা। কাপড়-চোপর ঠিক রাখবোনা, রাস্তায় পোলাগো দেখলেই রংঢং করবো। এগুলাও খারাপ। আম্মা, ২০টা টাকা দাওতো, কলম কিনা লাগবো!

মুন্না ৪টা বেনসন কিনলো। নতুন ৩টা নাম্বার পাইসে। আজকে কনফারেন্স কইরা মেয়েগুলারে জ্বালান লাগবে !

২)

রঞ্জু এখন মুগদায়। এক মেয়ের পিছা পিছে হাটতে হাটতে এসে পরেছে। রাস্তায় বেশ কয়বার কথা বলার চেষ্টা করে লাভ হয়নাই। ফোন নাম্বার চাইলেও দেয়নাই। মেয়েগুলা প্রচন্ড আনস্মার্ট! সমস্যা হইলো, এলাকার বাইরে যে আসলো, মুগদায় তার তেমন প্রতিপত্তি নাই। এখন যদি মেয়ে ভাই-টাই নিয়ে আসে, তাইলে তো ভবলীলা সাঙ্গ!

- ওই ছেলেটা ভাইয়া, ওই যে লাল শার্ট , থ্রি-কোয়ার্টার প্যান্ট পরা ছেলেটা!
৬-৭টা ছেলে রঞ্জুর দিকে দৌড়ায় আসতেছে। রঞ্জুর আত্মা কেপে উঠলো, ইয়া আল্লাহ, ইয়া পরওয়ারদিগার! এই যাত্রা বাচাও!
- ওই হারামীর পুত, ওই বান্দীর পুত, দাড়া কইতাসি। তুই পালাবি কই শালা, খাড়া !
রঞ্জু দৌড়াচ্ছে, প্রানপনে দৌড়াচ্ছে। তার প্রচন্ড পিশাবের বেগ এসেছে, কোনো জায়গায় দাঁড়িয়ে পিশাব করার উপায় নেই! সে দৌড়াচ্ছে, তার সামনে এখন শুধুই পথ, শেষ হচ্ছেনা।


৩)

মুন্নার ফোন বেজে উঠলো। বাসা থেকে ফোন এসেছে। এই মজার টাইমে ফোন ধরার কোনো মানে হয়না!
মুন্না আর তার পরানের বন্ধু মিশা মিলে এক মেয়েকে ভয় দেখিয়ে গলিতে নিয়ে এসেছে। তাদের সাথে গলিতে না ঢুকলে রাস্তায় তাকে দিগম্বর করে দিবে, এই ভয় দেখিয়ে তাকে গলিতে এনেছে।
- এই, ওড়না আমার হাতে দে।
- ভাই, আমারে ছাইড়া দেন। আপনের পায়ে পড়ি।
- ওই মিশা, মাগীর দুই হাত চাইপ্পা ধর তো! ওয় বেশী ফট ফট করতাসে
- খোদার কসম লাগে ভাই! আমারে ছাইড়া দেন। আমার আত্মহত্যা করন ছাড়া উপায় থাকবোনা ভাই। আমারে মাফ কইরা দেন ভাই!
- চোপ! তোর লগে তখন একটু গল্প করতে চাইছিলাম তখন বহুত ভাব দেখাইসিলি। তুই ফাহাদের লগে কথা কইতে পারোস আর আমার লগে পারোস না ক্যান? ফাহাদে কেলাসে ফাস্ট হয় দেইখ্যা ? অহন দেখ , তোরে মজাটা দেখাই। মিশার বাচ্চা তোরে কি কইলাম!
- ভাই, আমারে মাফ কইরা দেন। আমি আর কারো লগে কথা কমুনা। আমারে ছাইড়া দেন!

আবারো মুন্নার ফোন আসলো। মিশার হাতে মেয়েটাকে ধরিয়ে একটু দূরে এসে মুন্না ফোন ধরলো।
- হ্যালো
- মুন্নারে, বাপ , তুই কই গেলি রে ............ তোর বোইন তো গলায় ফাসি দিসেরে বাপ......। ও বাপ রে ............ ও আল্লাহ .........
মুন্না আর কিছু শুনতে পেলোনা, হাত থেকে মোবাইল পরে গেলো। ছুটে গেলো বাসায়।


৪)

গনপিটুনিতে এক বখাটের মৃত্যু

গতকাল মুগদাপাড়ায় গনপিটুনিতে রঞ্জু(১৭) নামে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু ঘটে। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী, স্মৃতি(১৫) নামের এক মেয়ের পিছে পিছে সে এখানে আসে এবং মেয়েটাকে বারবার যৌন হয়রানী করে। এলাকাবাসী তা প্রত্যক্ষ্য করে তাকে বোঝানোর পরও সে স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে বাজে উক্তি করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে স্মৃতির বস্ত্র হরণে উদ্যত হলে এলাকাবাসীর বেদম পিটুনীতে তার উক্ত স্থলে মৃত্যু ঘটে।
দৈনিক হায় হায় দিন, স্টাফ রিপোর্টার।

( রঞ্জু মৃত্যুর আগে পিশাব করতে পারেনি। মৃত্যুর মধ্যে দিয়েই তার পিশাব বের হয়ে যায়)

৫)

মুন্নার বোন, ঈশিতা ফাসি দিয়েছে। রাস্তায় আসার সময় কিছু বখাটে ছেলে তার শরীরে আপত্তিকর জায়গায় ধরাধরি করে এবং রাস্তায় তাকে লাঞ্চিত করে। সে সহ্য করতে না পেরে বাসায় এসে গলায় ওড়না ঝুলিয়ে ফাসিতে ঝুলাটাকেই জীবনের শান্তিময় অধ্যায় বলে মেনে নেয়।
মুন্না বাকরুদ্ধ হয়ে পরে। যে ওড়না সে আরেক মেয়ের গলা থেকে খুলে নিয়েছিলো, সেই ওড়না আজ তার বোনের গলায় ফাসি হলো।

মুন্না বর্তমানে অপ্রকৃতস্থ। তাকে বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় ওড়না হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে।

রুপকের আশ্রয়ে বাংলা ব্লগগুলোর ২টা দিন ( নির্মম উদাহরণ সহ )

……… বেইলি রোডে হেল্ভেশিয়ার ঠিক তলে হাটা খুবি বীরত্বের। সবাই পারেনা। কেননা ময়লার বিশাল এক ঢিবি থেকে এমন উৎকট গন্ধ বের হয় যা নাড়ি-ভুড়ি বের করার জন্য যথেষ্ট! কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি, ময়লার পাশে দিয়ে গেলেই বারবার নিঃশ্বাস নেয়া লাগে! যতোই দম চেপে রাখার চেষ্টা করিনা কেনো, বারবার নাকে কিভাবে যেনো ঢুকে যায় গন্ধটা ! প্রতিবারই পেটে একটা করে পাক মেরে উঠে।

একই ধরণের অন্যরকম একটা ঘটনা হলো রোজার সময় বারবার থুথু আসে মুখে! এই যেমন এখন, কতবার থুথু ফেলেন বাইরে? কিন্তু রোজার সময় বারবার মুখে থুথু জমে যায়, (এই ক্ষেত্রে থুথু বলা ঠিক হবেনা, অনেকে ঘেন্না পেতে পারেন, আমি টায়ালিন ব্যাবহার করবো) তার থেকেও বড় সমস্যা হলো, যারা মনে করেন টায়ালিন গিলে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যাবে তাদের মুখে আরো বেশী টায়ালিন জমে! বিশ্বাস না হলে কালকে একটা নফল রোজা রেখে দেখুন!


আবার ধরেন আপনি রাস্তায়, কোনো স্বল্প বসনা মেয়ে সামনে দিয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি একবার তাকান, তখন ইচ্ছা না থাকলেও দেখবেন কিভাবে যেনো চোখ চলে যায়। আমি অবশ্য মহামানবদের নয়, বরং ছেড়া জিন্স পড়া পুলাপানদের কথা বলছি।


এই সব ঘেন্নাত্মক কথা-বার্তা বলার কোনো মানে আছে? আছে ! আমি আসলে বুঝাতে চাচ্ছিলাম যে, যা কিছু আপত্তিকর তার দিকেই বারবার আমাদের নজর যায়। এই ফাউল প্যাচাল পারার অনুপ্রেরণা আমি পাইসি কবি ফররুখ আহমেদ এর থেকে। উনার সব কবিতাই রূপক! রুপকের মধ্যেই তিনি মুসলমানদেরকে ঐক্য গঠন করতে বলেছেন, অথচ নজরুল গলার রগ ফুলিয়ে ইংরেজদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চেঁচিয়েছেন! আমার নজরুলের মতো সাহস নাই, তাই ফররুখ আহমেদ এর মতো চোখ নামিয়ে কথা বলি।

এগুলা বলার উদ্দ্যেশ্য ছোট্ট করে বলছি, বুঝে নেন।

“ ২৭ তারিখ রাত থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলা ব্লগগুলোর  অবস্থা লক্ষ্য করেছিলেন কেউ ? গালাগালি’র টিকা (ভ্যাক্সিন) আবিষ্কার করাটা আগামী নোবেল প্রাইজের জন্য বাধ্যতামুলক হয়ে দাড়িয়েছে। আমি জানি পায়খানার গন্ধ খারাপ, আমি জানি থুথু বারবার আসে , আমি জানি হাফ উলঙ্গ মেয়ের দিকে তাকিয়ে রুচি নষ্ট করার মানে হয়না। তারপরেও সেই ফাঁদে আমরা বারবার পা দেই। এই ২দিন আমরাও তাই করেছি। খাশি না জাশি, তাদেরকে দেখিয়েছি আমরা - তোরা যতই পায়খানা গায়ে মেখে আয়, আমরা ঠিকই শুকবো।“